স্টাফ রিপোর্টার:: পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে জগন্নাথপুর পৌর এলাকায় বিএনপির দু’পক্ষের মধ্য সংঘর্ষের ঘটনায় কমপক্ষে ৫ জন আহত হয়েছে। ভাংচুর করা হয়েছে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী রাজু আহমদের প্রধান নির্বাচনী অফিস। পৌর শহরের বটেরতল নামক স্থানে বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটায় এঘটনা ঘটে। এসময় শহরে বিএনপির দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। বতর্মানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির দু’পক্ষের এমন সংঘর্ষ বিএনপির প্রাথী রাজু আহমদের শিবিরে হতাশা দেখা দিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্র্শী ও বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, বুধবার রাতে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন নিয়ে যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিএনপি নেতা এম এ কাদির ও উপজেলা বিএনপির প্রথম সদস্য কবির আহমদের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। যার জের ধরে বৃহস্পতিবার কবির আহমদ গ্রুপের সমর্থকরা নির্বাচনী কার্যালয়ে গিয়ে এম এ কাদিরকে লাঞ্চিত করে। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে বিএনপির প্রার্থী রাজু আহমদের নির্বাচনী কার্যালয় ভাংচুর করা হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫ জন। এর মধ্যে গুরুতর আহত বিএনপির কর্মী মঈন উদ্দিনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপর আহত প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছেন। বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান,দীর্ঘদিন ধরে জগন্নাথপুর বিএনপিতে কোন্দল গ্রুপিং চলছে। যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমদের সাথে যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা এম এ কাদিরের রাজনৈতিক দ্বন্ধ রয়েছে। যুক্তরাজ্যে একজন আরেকজনকে ঘায়েল করতে সংবাদ সন্মেলন পর্যন্ত করেছিলেন। যার প্রভাব পড়েছে জগন্নাথপুর বিএনপিতে। দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, কয়ছর আহমদ যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর জগন্নাথপুর উপজেলা বিএনপির দীর্ঘদিনের নের্তৃত্বে পরিবর্তন আসে। উপজেলা বিএনপির সভাপতি আক্তার হোসেনকে বাদ দিয়ে লেঃ কর্ণেল অবঃ সৈয়দ আলী আহমদকে আহ্বায়ক ও কয়ছর এম আহমদের ছোটভাই কবির আহমদকে প্রথম সদস্য করে কমিটি গঠন করা হয়। এরপর থেকে বিএনপির দু’ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়ে। পৌর নির্বাচনী হাওয়া শুরু হলে আক্তার হোসেনের বলয় থেকে আবিবুল বারী আয়হানকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করার জন্য কেন্দ্রে নাম পাঠানো হয়। অপরদিকে লেঃ কর্নেল অবঃ সৈয়দ আলী আহমদ ও কবির আহমদের প্রার্থী হিসেবে রাজু আহমদ কেন্দ্র থেকে চুড়ান্ত প্রার্থী মনোনীত হন। এরপর থেকে কর্ণেল অবঃ সৈয়দ আলী আহমদ ও কবির আহমদের অনুসারীরা মাঠে সক্রিয় থাকলেও আক্তার হোসেন বলয়ের লোকজন অনেকটা নিস্কিয় ছিলেন। পরবর্তীতে জেলা নের্তৃবৃন্দের হস্তপেক্ষপে আক্তার হোসেন ব্যতিত অন্যরা মাঠে নামেন। কিন্তুু পৌর নির্বাচনের শুরু থেকে পৌর বিএনপি সভাপতি এম এ মতিনের নের্তৃত্বে বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে সক্রিয় অবস্থান নেন। নির্বচনে বিএনপি প্রার্থী রাজু আহমদের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন নিয়ে পৌর বিএনপি ও উপজেলা বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। যার জের ধরে বৃহস্পতিবার এঘটনা ঘটে। পৌর বিএনপির আহ্বায়ক এম এ মতিন জগন্নাথপুর টুয়েন্টিফোর ডটকম কে জানান, নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে মতবিরোধ রয়েছে। গতকাল বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতার উপস্থিতিতে কর্মীসভা শেষে কবির আহমদের নের্তৃত্বে হামলা চালিয়ে বিএনপি প্রার্থী রাজুর নির্বাচনী কার্যালয় ভাংচুর করা হয়। উপজেলা বিএনপির প্রথম সদস্য কবির আহমদ বলেন, কর্মীসভা শেষে আমি বাড়ি চলে আসি। দলীয় কয়েকজন কর্মী ফেরার পথে পৌর বিএনপি সভাপতি এম এ মতিনের অনুসারীরা তাদেরকে গালিগালাজ করেন। এনিয়ে তাদের মধ্যে কিছু অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে বলে শুণেছি। অপরদিকে যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা এম এ কাদির জগন্নাথপুর টুয়েন্টিফোর ডটকম কে বলেন,বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সামান্য ভূল বুঝাবুঝি হয়েছে। এছাড়া এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আসাদুজ্জামান জগন্নাথপুর টুয়েন্টিফোর ডটকম কে জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।