জেলা হিসেবে সুনামগঞ্জ সারাদেশে তৃতীয়
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:: উপজেলা পরিষদ পারদর্শিতা মূল্যায়নে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ সারা দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। জেলা ভিত্তিক কর্ম তৎপরতায় সুনামগঞ্জ জেলা সারা দেশে হয়েছে তৃতীয়।
স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপজেলা গভর্ন্যান্স প্রকল্প এই মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রকাশ করে। গতকাল সোমবার সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ‘জেলা পর্যায়ে উপজেলা পরিষদের পারফরম্যান্স এ্যাসেসমেন্ট ডিসসেমিনেশন ও ওরিয়েন্টেশন কর্মশালা’য় এই তথ্য জানানো হয়।
সুনামগঞ্জের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দেবজিৎ সিংহের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম। মূল্যায়ন প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইএম ঢাকার ম্যানেজমেন্ট কাউন্সিলর মো. সাইদুর রহমান।
প্রতিবেদনে বলা হয়, উপজেলা গর্ভন্যান্স প্রকল্পের আওতায় ২০১৩-১৪ সালে সাতটি বিভাগের সাতটি জেলার ৬৫টি উপজেলায় পারদর্শিতা মূল্যায়ন করা হয়। উপজেলা পরিষদ আইন অনুযায়ী কার্য পরিচালনা, পরিকল্পনা ও বাজেট প্রণয়ন, নীতিমালার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে উপজেলা পরিষদের আর্থিক ব্যবাস্থাপনা, উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে নীতিমালা অনুসরণ, উপজেলা পরিষদের স্থানীয় কমিটিগুলো কার্যকর, নিয়মতান্ত্রিকভাবে সভা পরিচালনা, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন ইত্যাদি বিবেচনা করে পারদর্শিতা নির্ধারণ করা হয়।
উপজেলা পরিষদের পারদর্শিতা মূল্যায়নের শর্ত সমূহ উপস্থাপন করে কর্মশালায় জানানো হয়, ২০১৪-১৫ অর্থ বছরের মূল্যায়ন সেপ্টেম্বর মাসে সম্পন্ন হবে।
কর্মশালায় মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ, জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তাদীর আহমদ, দিরাই উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ছবি চৌধুরী, দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, দৈনিক সুনামকণ্ঠের সম্পাদক বিজন সেন রায় প্রমুখ।
জেলা ভিত্তিক পারদর্শিতা মূল্যায়নে কিশোরগঞ্জ পেয়েছে ৪০ দশমিক ৩৮, সিরাজগঞ্জ ৩৬ দশমিক ১৩, সুনামগঞ্জ ৩৫ দশমিক ৯১, রংপুর ৩৫ দশমিক ৬৩, ব্রাক্ষনবাড়িয়া ৩৩ দশমিক ৭৮, বরগুনা ৩০ দশমিক ৮০, খুলনা ২৯ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট অর্জন করে।
সুনামগঞ্জ জেলার উপজেলাগুলোর মূল্যায়নে জগন্নাথপুর ৭৪, সুনামগঞ্জ সদর ৪৭, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ৪২, দোয়ারাবাজার ৪২, বিশ্বম্ভরপুর ৩৪, শাল্লা ৩৪, ছাতক ৩১, দিরাই ৩০, জামালগঞ্জ ২৪, ধর্মপাশা ২২ ও তাহিরপুর ১৭ নম্বর পেয়েছে।
বিভিন্ন সূচকে ১০০ নম্বরের মধ্যে ৭৪ নম্বর পেয়ে সারা দেশের মধ্যে জগন্নাথপুর উপজেলা প্রথম হয়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদকে অভিনন্দন জানিয়ে জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম এই জেলার সকল উপজেলাকে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণে কাজ করার আহবান জানান। সম্মিলিত চেষ্ঠায় আগামিতে জেলা হিসেবে সুনামগঞ্জ প্রথম হবে এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা গর্ভন্যান্স প্রকল্পের জাতীয় প্রকল্প বোর্ড সদস্য মুক্তাদীর আহমদ বলেন,‘উপজেলা গর্ভন্যান্স প্রকল্পের মাধ্যমে পাইলট প্রকল্প হিসেবে সাতটি জেলার উপজেলা পরিষদসমূহকে বিভিন্ন পর্যায়ে ব্লক গ্র্যান্টসহ বিভিন্ন প্রণোদনা নিয়ে পৃষ্টপোষকতা করা হচ্ছে। আমরা এই প্রকল্পের আওতায় নিজেদের সক্ষমতা তুলে ধরতে সফল হয়েছি। আশা করি এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।’ তিনি জানান, সিলেট বিভাগের মধ্যে সুনামগঞ্জ একমাত্র পাইলট জেলা হিসেবে এই প্রকল্পের আওতায় কাজ পরিচালনা করছে।